‘লুটপাটের তথ্য লুকাতে গণশুনানি তুলে দেওয়া হয়েছে’

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘আইন পরিবর্তন করে গণশুনানি তুলে দেওয়া হলো। এর ফলে কোথায় কত হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে, কীভাবে লুটপাট হয়েছে, তা আর বলা যাবে না।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত একটি সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা : ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে প্রস্তাবিত পদক্ষেপ’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।

২০২২ সালে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় দেখা গেল জ্বালানি উন্নয়ন ফান্ডের ৬৫ শতাংশ ব্যয় হয়নি। ৩৫ শতাংশ জ্বালানি কোথায়-কীভাবে ব্যয় করেছে, সেটা কেউ বলতে পারছে না।

শামসুল আলম বলেন, ‘আইন পরিবর্তন করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনকে (বিপিসি) ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বানানো হয়েছে। ফলে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিপিসিকে আর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানিতে যেতে হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, জ্বালানিতে রাতারাতি আইন বদলে গেল। দাম বাড়াতে বিপিসিকে আর বিইআরসিতে আসা লাগল না। বিপিসি নিজেই এখন ব্যবসায়ী। তারা ফার্নেস অয়েল এবং জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করে। অর্থাৎ ব্যবসায়ী নিজেই তার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে। এ খাতে একনায়কতন্ত্র ও মনোপলি প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। তারা যে দাম নির্ধারণ করেছে, সেটাই আমাদের মানতে হবে। এত বড় অবিচার কোনো দেশে আছে বলে জানা নেই।

শামসুল আলম বলেন, ‘জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল, বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিলে আমরা টাকা দিয়ে যাচ্ছি। এগুলো না দিলে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমত। আমাদের টাকার ওপর সুদ নেওয়া হচ্ছে। এভাবে আমরা ঠকছি। তিনি বলেন, ট্রান্সমিশন ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাছে ১৪ হাজার কোটি টাকা জমা আছে। এর আগে আইন করে বিদ্যুৎ খাত, জ্বালানি খাত হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। আমরা স্ট্যাবলাইজ ফান্ড করার কথা বলেছি। কিন্তু সেসব কথা শোনেনি। এখন ৮ ঘণ্টা, ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়।’

সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বুয়েটের অধ্যাপক প্রফেসর ইজাজ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা মনে করেন, লোডশেডিং আগামী মাস বা বছর অব্যাহত থাকবে, যা পরিবার এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাদের মতে, এবারের বাজেটে জ্বালানি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।